শিরোনাম
Passenger Voice | ১১:১৬ এএম, ২০২৩-০৬-২৬
টানা চারদিন হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সার্ভার। ফলে এ চার দিন গ্রাহকদের অনলাইন সেবা দিতে সমস্যায় পড়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকটি। দীর্ঘ চেষ্টার পর রোববার দিন শেষে সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান।
রোববার (২৫ জুন) রাতে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সার্ভার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকলেও কোনো ডাটা বা তথ্য খোয়া যায়নি বলেও দাবি করেন এ ব্যাংক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘দুষ্টু লোকেরা আমাদের সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কিন্তু কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আমাদের সব ডকুমেন্ট অক্ষত আছে। ইতোমধ্যে আমরা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। হ্যাকিংয়ের ফলে সারা দেশে কাজের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে।’
কারা হ্যাক করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত হবে; তখন বুঝা যাবে কে কীভাবে এটি করল।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘শুনেছি কৃষি ব্যাংকের সার্ভার ডাউন হয়েছে, এটি অনেকটাই ঠিক হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন সমস্যা হয়নি। তাদের নিজস্ব সার্ভার ডাউন হয়েছে।’
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কৃষি ব্যাংকের সার্ভার কাজ করছিল না। সারা দেশের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের এক অভ্যন্তরীণ বার্তায় জানানো হয়- হঠাৎ সার্ভার ডাউন হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সারাদিন অপেক্ষা করেও সার্ভার কাজ না করায় সেবা পাননি গ্রাহকরা।
নাম প্রকাশ না করে কৃষি ব্যাংকের একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকেই সার্ভার কাজ করছে না। আমাদের জানানো হয়েছে- শীঘ্রই ঠিক হবে। কিন্তু রোববারও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। একটি সার্ভার দিয়ে সব কাজ কোনোমতে চালিয়ে নিচ্ছি।’
ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার সার্ভার হ্যাক হওয়ার পর থেকেই উদ্ধারের জন্য চেষ্টা শুরু করে ব্যাংকের নিজস্ব সাইবার টিম। তিনদিন চেষ্টা করে শনিবার পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বিশেষায়িত সাইবার টিমের সহায়তায় রোববার নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি আরও জানান, ‘বিকল্প উপায়ে রান করার চেষ্টা চলছে। তাই সবগুলো সার্ভার একযোগে কাজ করছে না।’
কোন ডকুমেন্ট নষ্ট হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, কিছু ডকুমেন্ট বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ব্যাংকের অন্য একটি সূত্র বলছে, হ্যাকারদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হচ্ছে। হ্যাকার গ্রুপ একযোগে ফেরত না দিয়ে ধীরে ধীরে দিচ্ছে। বিষয়টি তাদের দাবিকৃত অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালে কৃষি ব্যাংকের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর ‘আইয়েলদাজ টার্কিশ সাইবার আর্মি’ নামে একটি গ্রুপ ওয়েবসাইটটি হ্যাক করে। তখন ব্যাংককে সতর্ক করে একটি বার্তা দিয়েছিল হ্যাকাররা। ওই বার্তায় বলা হয় ‘সাইট নিরাপত্তা দুর্বলতা বন্ধ করুন, অন্যথায় দূষিত হ্যাকাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।’ পিডিএফ ফাইলে বার্তাটি বসিয়ে দিয়ে তার নিচে তুরস্কের একটি পতাকাও দিয়েছিল হ্যাকাররা।
প্যা/ভ/ম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2024 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.